কম্পিউটার হ্যাং হওয়ার কারণ ও প্রতিকার
কম্পিউটার হ্যাং হওয়া
কম্পিউটার যখন তার কাজের ফলাফল ঠিক সময় নিয়ে ফলাফল প্রকাশ করতে থাকে তত বলে। পৃথিবীর সকল কাজের পিছনেই একটা না একটা না কারণ রয়েছে।
ঠিক তেমনি হবার কম্পিউটার হ্যাং হবার পিছনেও কারণ রয়েছে।
আর সে কারণগুলােই এখন বলব। বিভিন্ন কারণে কম্পিউটার হ্যাং হতে পারে। এগুলাের মধ্যে যেসব কারণগুলাে সবচেয়ে বেশি ঘটে থাকে সেগুলাে নিয়ে আলােচনা করা হলাে।
কারণ ও প্রতিকার
* প্রসেসরের কানেকশন ঠিকমত না হলে :
অনেক সময় বিভিন্ন কারণে কানেকশন লুজ হয়ে যেতে পারে। এখানেও সিপিইউ কেসিং খােলাকেই আমি দায়ী করবাে। এজন্য কম্পিউটারের প্রসেসরের কানেকশন লুজ হয়ে গেলে বা ঠিকমত না হলে কম্পিউটার হঠাৎ করে হ্যাং হতে পারে। এমনকি এর জন্য কম্পিউটার রিস্টার্ট দেওয়ার পরে ঠিক নাও হতে পারে। কেননা কম্পিউটারের সকল কাজ করে থাকে প্রসেসর।
* কম্পিউটার র্যামের পরিমাণ কম হলে :
আমরা যখন কম্পিউটারে কোন কাজ করি তখন সেই কাজটা সম্পন্ন হয় কম্পিউটারের মেমােরী অংশে। আর এই মেমােরী অংশের অন্যতম উপকরণ হলাে র্যাম। ফলে র্যামের পরিমাণ কম হলে বা
র্যাম কোনভাবে দুর্বল হয়ে পড়লে কম্পিউটার ঠিকমত কাজ করতে পারে না। কম্পিউটারে হ্যাং করে।
* কম্পিউটারের প্রসেসরের মান ভাল না হলে :
কম্পিউটারের কাজের গতি নির্ভর করে কম্পিউটারের প্রসেসরের উপর। যেমন একজন ৫ বছরের বাচ্চাকে
দিয়ে নিশ্চয় ১মন ওজনের চালের বস্তা এক তলা থেকে চার তলায় উঠানাে সম্ভব নয়।
ঠিক সেইরকম প্রসেসরের মান ভাল না হলে সেই কম্পিউটার দিয়ে অতিরিক্ত কাজ করালে কম্পিউটার হ্যাং হওয়াটাই স্বাভাবিক।
* কম্পিউটার হার্ডডিক্স এর কানেকশন ঠিকমত না হলে :
কম্পিউটারের হার্ডডিক্স-এর কানেকশন সঠিক না হলে হঠাৎ কম্পিউটার হ্যাং হতে পারে। এই কাজটি যে কোন সময় ঘটতে পারে। হয়তাে আপনি কোন কারণে কম্পিউটারের
সিপিইউ কভার খুলেছেন।
এই অবস্থায় কভার লাগানাের সময় কোন কারণে হার্ডডিস্কের ক্যাবলে টান পড়তে পারে। ফলে হার্ডডিস্কের যে কোন কানেক্টর লুজ হয়ে গেলেও কম্পিউটার হ্যাং করতে পারে।
* অপারেটিং সিস্টেমে ত্রুটি থাকলে :
অপারেটং সিস্টেমে ত্রুটি বলতে কোন সিস্টেম ফাইল নষ্ট হয়ে যাওয়াকে বুঝায়। অনেক নতুন ইউজার কম্পিউটার অপারেটিং করতে গিয়ে অযাচিতভাবে Registry Editor ওপেন করে সেখানে কিছু পরিবর্তন করে থাকে। এর ফলে কম্পিউটারের স্বাভাবিক সিস্টেম ফাইলে সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। যার কারণে কম্পিউটার হ্যাং করতে পারে।
অনেক সময় এই ধরনের সমস্যা গুরুতর আকার ধারণ করে উইনডােজ সিস্টেম সফটওয়্যারই ড্যামেজ হয়ে যেতে পারে। তখন আবার নতুন করে সফটওয়্যার ইনস্টল করতে হতে পারে।
* অন্য কোন হার্ডওয়্যারে ত্রুটি থাকলে :
কম্পিউটারের সাথে লাগানাে ইন্টারন্যাল বা এক্সটারন্যাল যে কোন হার্ডওয়্যারে কোন ত্রুটি থাকলেও কম্পিউটার। হ্যাং হতে পারে। এমনকি সিডি/ডিভিডি ড্রাইভের কানেকশনে কিংবা লেজার দিয়ে কোন সমস্যা থাকলেও
কম্পিউটার হ্যাং হতে ভুল করে না। অন্য কোন নতুন হার্ডওয়্যার কানেকশন দেয়ার সময় লােকেশন চিহ্নিত না করে তা চালালে অথবা সেই হার্ডওয়্যারে সমস্যা থাকলেও কম্পিউটার হ্যাং হতে পারে ।
* অনেক প্রােগ্রাম একসাথে চালু করলে :
ঐযে আগেই বলেছিলাম, একজন ৫ বছরের বাচ্চাকে দিয়ে নিশ্চয় ১মন ওজনের চালের বস্তা এক তলা থেকে চার তলায় উঠানাে সম্ভব নয়। ঠিক সেইরকম প্রসেসরের মান ভাল না হলে সেই কম্পিউটার দিয়ে অতিরিক্ত কাজ করালে
কম্পিউটার হ্যাং হওয়াটাই স্বাভাবিক। ইদানিং আমাদের অনেকেই সস্তা দামের কম্পিউটার কিনে তার দ্বারা খুবই দামী। কাজ আদায়ের চেষ্টা করে থাকেন। আর হ্যা এটার কারণে সবচেয়ে বেশ কম্পিউটার হ্যাং হয়। মনে করেন
আপনার কম্পিউটার র্যাম এর পরিমাণ ১২৮ কিন্তু আপনি অনেক বড় বড় কয়েকটি প্রােগ্রাম চালু করলেন। তাহলে হ্যাং হওয়া স্বাভাবিক। কেননা তখন কম্পিউটার র্যাম অকেজো হয়ে যেতে পারে।
* কম্পিউটার ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হলে :
পরিসংখ্যানে দেখা ২ সাধারণত এই কারণেই কম্পিউটারে বেশী হ্যাং হয়। কম্পিউটারে আগত তাই।" অপারেটিং সিস্টেমের কিছু ফাইলের কার্যপদ্ধতিকে বন্ধ করে দেয় যার ক
কম্পিউটার হ্যাং হয়।
* হাই গ্রাফিক্স সম্পন্ন গেইম চালালে :
আপনার কম্পিউটারে গ্রাফিক্স কার্ড লাগানাে নেই। অথচ, আপনি হাই গ্রাফিক্স সম্পন্ন গেম এনেছেন বন্ধুর কাছ থেকে। আর এটা আপনার বন্ধুর কম্পিউটারে যেহেতু চলে সুতরাং অজ্ঞতার কারণে আপনি
এটা আপনার কম্পিউটারে ইনস্টল করে চালাতে গেলেন। এতে আপনার কম্পিউটার র্যাম যদি কম হয় তার উপর আপনি যদি হাই গ্রাফিক্স সম্পন্ন গেইম। চালান তাহলে কম্পিউটার হ্যাং হতেই পারে।
এমনকি আপনার কম্পিউটারে যদি কম মেমােরীর গ্রাফিক্স কার্ড থাকে তাহলে সেই গ্রাফিক্স কার্ডের উপর আলাদা চাপ প্রযুক্ত হয়ে সেটা চিরতরে নষ্টও হয়ে যেতে পারে।
মাত্র কয়দিন আগে আমার নিজের একটি কম্পিউটারে ২৫৬ মেগাবাইটের জিফোর্স গ্রাফিক্স কার্ডের বারােটা আমি এভাবেই বাজিয়েছি উচ্চমাত্রার গেম খেলতে গিয়ে।
* হই গ্রাফিক্স সম্পন্ন সফটওয়্যার ব্যাবহার করলে : একইভাবে উচ্চমাত্রার গ্রাফিক্স সম্পন্ন সফটওয়্যারও আপনি ব্যবহার করতে পারবেন না যদি আপনার কম্পিউটার কম শক্তিসম্পন্ন হয়ে থাকে। বাজারে প্রচলিত এমন কিছু
সফটওয়্যার রয়েছে যেগুলাে খুবই উচ্চ গ্রাফিক্স সম্পন্ন। যা সাধারণত কম র্যাম ও কম। প্রসেসরের ক্ষমতা সম্পন্ন কম্পিউটারে চালনা করলে কম্পিউটার হ্যাং হয়।
* কম্পিউটারে অতি উচ্চমানের এন্টি ভাইরাস ব্যবহার করলে :
অনেকসময় ভাইরাসের আক্রমণ থেকে রক্ষা পাবার জন্য আমরা পাগলের মতাে একের পর এক এন্টি ভাইরাস ইনস্টল করে থাকি। এক্ষেত্রে হয়তাে বড় ভলিউমের একটি এন্টি ভাইরাস ইনস্টল করা হয়ে থাকে। যার ফলে সেই এন্টি ভাইরাসের মাত্রা সহ্য করার
ক্ষমতা আমার কম্পিউটারে নাও থাকতে পারে। এজন্য কম্পিউটার তা পারে। এছাড়া, অনেকে বাড়তি সুরক্ষার জন্য একটি কম্পিউটারে একাধিক ভাইরাস ইনস্টল করে থাকে। কিন্তু তাদের অনেকেই জানে না,
একাধিক এন্টি ভাইরাস ইনস্টল করা হলেও কার্যকর থাকে মাত্র একটি। আর অপরটি ছেলে কার্যকর থাকে না তখন সেটা কম্পিউটারের অন্যান্য সফটওয়্যারকে অকাত করার কাজে আত্মনিবেদিত হয়। তখন কম্পিউটার ঘন ঘন হ্যাং হতে পারে।
* কম্পিউটারের ফাইলগুলাে এলােমেলােভাবে সাজানাে থাকলে :
কম্পিউটারের ফাইলগুলাে একটা গাছের পাতার মতাে থরে থরে সাজানাে থাকে। কখনও কোন কারণে এই সাজানাের ব্যত্যয় ঘটতে পারে। যেমন অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে। কম্পিউটার রিস্টার্ট করলে,
হঠাৎ কম্পিউটার বন্ধ হয়ে গেলে, ঘন ঘন কম্পিউটারে বিদ্যুৎ সমস্যা দেখা দিলে । এসব কারণে কম্পিউটারের ফাইলগুলাে। এলােমেলােভাবে ছড়িয়ে ছিটিয়ে যায়। সাধারত এই ধরনের ঘটনা ঘটলে। উইনডােজ রিস্টার্টের সময় একটি নীল রঙের পার মাধ্যমে এটা এ্যাডজাস্ট করে নেয়।
অনেকে এইসময় এই এ্যাডজাস্টমেন্ট ২াতিল করে সরাসরি উইনডােজ ওপেন করে থাকে। অথচ, তারা জানে না জানতে চায় না, ঐ উইনডােতে পরিষ্কারভাবে এবং কঠোরভাবে রেকোমেন্ড করা আছে এই প্রক্রিয়াকে চলমান। রাখার জন্য।
এছাড়াও অন্য কিছু কারণে কম্পিউটারের ফাইল এলােমেলাে হয়ে যেতে পারে। তখন ঐসব ফাইল নিয়ে কাজ করতে কম্পিউটারের অনেক বেশী। সময় লাগে। যার কারণে কম্পিউটার হ্যাং হতে পারে।